শহীদ সেনা দিবসের নাম পরিবর্তন করে ‘পিলখানা গণহত্যা দিবস’ রাখার দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার (১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জেলবন্দি বিডিআর সদস্যদের পরিবারবর্গ কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ২০০৯ সালে পিলখানায় নিহত সেনা কর্মকর্তারা সেনা কর্মকর্তা হিসেবে শহীদ হননি, বরং তারা বিডিআরের পদস্থ কর্মী হিসেবে শহীদ হয়েছেন। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর বহু বিডিআর জওয়ান নির্যাতিত হয়ে মারা গেছেন এবং সরকার এখনও তাদের মৃত্যুর সঠিক পরিসংখ্যান, তালিকা বা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রকাশ করেনি। বরং আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক ভুয়া তথ্য প্রচার করা হয়েছে, যেমন বলা হয়েছে যে, তারা স্ট্রোকে বা করোনায় মারা গেছেন।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ভারত এবং আওয়ামী লীগের জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মইনুল হাসানও একই অভিযোগ করেছেন। এই ঘটনার সময় বাইরে থেকে ২০-২১ জনের একটি দল পিলখানায় ঢুকে ছিল এবং তাদের মদদে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল। তবে সরকার এখনো এই বিষয় নিয়ে যথাযথ তদন্ত করেনি এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করতে একটি স্বাধীন গণতদন্ত কমিশন গঠন করা হোক। বিডিআরের সদস্যরা যারা নিরপরাধ, তাদের বিরুদ্ধে অবিচার করা হয়েছে এবং তাদের পরিবারগুলি আজও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন। তারা বিচারের দাবি জানাচ্ছে এবং রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কমপেনসেশন ও ক্ষতিপূরণের দাবি করছেন।
আয়োজকরা বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত না করে একটি প্রহসনমূলক বিচার হয়, যেখানে বহু নিরীহ বিডিআর সদস্যকে মিথ্যা অভিযোগে সাজা দেওয়া হয়। তদন্ত কমিশন গঠন হলেও, প্রশ্ন ওঠে নতুন কমিশন কতটা কার্যকর হবে যদি পূর্বের রায় বহাল থাকে। প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে সাজানো বিচার এখনও চলমান, এবং নিরপরাধ সৈনিকরা অন্যায়ভাবে শাস্তি পাচ্ছে। শহীদদের আত্মার শান্তি ও তাদের পরিবারের জন্য প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত না হলে রাষ্ট্রও এই অন্যায়ের দায় এড়াতে পারবে না।
সংবাদ সম্মেলনে যেসব দাবিদাওয়া তুলে ধরা হয় সেগুলো হলো
- পূর্ববর্তী রায় বাতিল করে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
- নতুন তদন্ত কমিশনের কার্যক্রম স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হতে হবে এবং গোপন শর্ত বাতিল করতে হবে।
- মিথ্যা অভিযোগে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের পুনর্বহাল ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।